“যেই সমাজে বিয়ে কঠিন হয়, সেই সমাজে ব্যভিচার সস্তা হয়ে যায়”
বর্তমান সমাজে আমরা বিয়েকে কঠিন ও বিয়ে বহির্ভূত কাজকে সহজ করে ফেলছি। বিয়েকে টাকা-পয়সার শর্ত, জাকজমকতা, পারষ্পরিক লেন-দেন ও সামাজিক রীতি-নীতির মধ্যে আবদ্ধ করে ফেলেছি। এতে বিয়ে করার মুখ্য উদ্দেশ্যই হারিয়ে যাচ্ছে। প্রশ্ন হলো- সামাজিক রীতি-রেওয়াজ এগুলো তো আমাদের জন্যই, আমাদের খুশির জন্যই, তবে এগুলো করাটা কি বাধ্যতামূলক? আমার যদি সামর্থ্যই না থাকে তাহলেও কি আমি এসব রীতি-প্রথা মানতে বাধ্য থাকবো? আর এগুলোর জন্য কি বিয়ে আটকে থাকবে?
যদিও এমনটি হওয়ার কথা নয়। আজকাল লাখ টাকার শাড়ি আর শেরওয়ানী না দিলে যেন বিয়েই হয় না। তাছাড়া বিয়ের শুরুতেই মেয়ের বাবা ও বর টাকার হিসাব করে নেয়। সমাজের মানুষে কি বলবে, মেয়েকে কি খালি হাতে বিদায় দিবো,-এসব কথা চিন্তা করে মেয়ের বাবা বিয়ের খরচ জোগাড় করতে ব্যস্ত থাকেন। অপরদিকে একটা ছেলে বিয়ের মোহরানার ও ভরণ-পোষনের হিসাব করেন।
অথচ রাসুল (সাঃ) বলেন, “যেই বিয়েতে খরচ কম সেই বিয়েতে বরকত বেশী” [আল- হাদীস]
এই প্রসঙ্গে যা বলা অতি জরুরী তাহলো-‘রোজ মোবাইলের টাকা, রেস্টুরেন্টের বিল, ক্লাবের খরচ দেয়া যায় আর ভরন-পোষনের টাকা দিতেই যত সমস্যা? আরো দুঃখের সাথে বলতে হয়, আজকাল মোহরানাস্বরূপ মেয়েদের অধিকার ও এর উদ্দেশ্য ছেলে-মেয়েরা উপলব্ধি না করে ছেলের সামর্থ্য থাকুক বা না থাকুক মেয়েরা উচ্চমূল্যের শর্ত রাখছে। অপরদিকে অনেক ছেলেরা টাকার বিনিময়ে মেয়েকে কিনে নেয়ার সমতুল্য মনে করছে। আবার অনেক ক্ষেত্রে মোহরানা কম হলে, আনন্দে হাফ ছেড়ে বাচার মত অবস্থা হচ্ছে।
রাসুল (সাঃ) বলেন- “সবচাইতে উত্তম বিয়ে হচ্ছে সহজতম বিয়ে (মোহরানার দিক থেকে)”। [ইবন মাজাহ, আবু দাউদ]
আমরা নানা ঝামেলার বেড়া-জালে বিয়েকে আবদ্ধ করে অনৈতিক ও অসামাজিক কাজকে উন্মুক্ত করছি। এর কারণে সমাজে দিন দিন অপরাধ বেড়েই চলছে। নিজেরাই সমস্যা সৃষ্টি করে জটিলতা বাড়াচ্ছি।
আমার ক্ষুদ্র জ্ঞান থেকে বলতে পারি এর অন্যতম প্রধান কারণ আমরা ইহকালকে পরকালের চেয়ে প্রাধন্য বেশী দিচ্ছি। আমরা দুনিয়ার আনন্দ ছাড়া যেনো কিছুই বুঝি না, কিন্তু আমরা কি ভুলে গেলাম যে, মুমিনদের জন্য ইহকাল নরক, এবং পরকাল স্বর্গ স্বরূপ।
পরিশেষে বলব, মহান আল্লাহ আমাদের অভিবাবকদের দায়িত্বশীল হওয়ার তৌফিক দিন এবং একই সাথে যুবক যুবতীদের অনৈতিক ও অসামাজিক কাজ হতে হেফাজত করুন- আমিন, ছুম্মা আমিন।
সংকলন- রাকিব খান