নির্বাচিত পোস্টসমূহ
Home » ইসলামী আকিদা » লাইলাতুম মুবারাকাহ বলতে কোন রাতকে বুঝায় ?

লাইলাতুম মুবারাকাহ বলতে কোন রাতকে বুঝায় ?

মহা পবিত্র লাইলাতুল বরাত নিয়ে কিছু বাতিল সম্প্রদায়ের মুসলমান নামধারী মুনাফেকেরা প্রায়ই সাধারণ মানুষকে বিব্রান্তিতে ফেলে দেয় | সাধারণ মুসলমানের কোরআন হাদিসের জ্ঞান কম বলেই তারা এতসব বুঝতে পারেনা বা তার প্রতি উত্তর দিতে পারেনা | লাইলাতুল বরাত প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফে এরশাদ করেন , ﻧﺎ ﺍﻧﺰﻟﻨﻪ ﻓﻰ ﻟﻴﻠﺔ ﻣﺒﺮﻛﺔ ﺍﻧﺎ ﻛﻨﺎ ﻣﻨﺬﺭﻳﻦ.
ﻓﻴﻬﺎ ﻳﻔﺮﻕ ﻛﻞ ﺍﻣﺮ ﺣﻜﻴﻢ. ﺍﻣﺮﺍ
ﻣﻦ ﻋﻨﺪﻧﺎ ﺍﻧﺎ ﻛﻨﺎ ﻣﺮﺳﻠﻴﻦ .
এই আয়াতে কারিমার লাইলাতুম মুবারাকাহ এর অর্থ নিয়েই বাতিল পন্থীরা আমাদেরকে বিব্রান্ত করার চেষ্টা করে | তাদের দাবি লাইলাতুম মুবারাকাহ দ্বারা নাকি শবে কদরের রাতকে বুঝানো হয়েছে ? হাদিস শরীফ থেকে এর আগেই আমরা এই লাইলাতুম মুবারাকার ফয়সালা পেয়ে গেছি | এর দ্বারা যে শবে বরাতকে বুঝানো হয়েছে তা স্পষ্ট হাদিস শরীফ দ্বারা প্রমান হয়ে গেছে | আজ এই লাইলাতুম মুবারাকাহ সম্পর্কে বিখ্যাত মুফাস্সেরিনে কেরামদের মত আপনাদের খেদমতে উপস্থাপন করবো ইন শাহ আল্লাহ |

রইসুল মুফাস্সেরীন হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদ্বি আল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত , আল্লাহ রাব্বুল আলামিন লাইলাতুম মুবারাকার অর্থাৎ ১৫ই শাবানের রাত্রিতে সিদ্ধান্ত সমূহ চূড়ান্ত করেন এবং শবে কদরের রাত্রিতে বাস্তবায়নকারী ফেরেস্থাদের কাছে তা সোপর্দ করেন | [ তাফসীরে খাযেন ৪র্থ খন্ড ১২২ পৃষ্ঠা ]

আল কুশায়রী রাহিমামুল্লাহ আলাইহি বলেন
, লাইলাতুম মুবারাকাহ শবে কদরের রাতকে এবং শবে বরাতের রাতকেও বলা হয় | [ তাফসীরে লাতাইফুল ইশরাত ]

ইবন উজাইবাহ রাহিমামুল্লাহ আলাইহি উনি বলেন , লাইলাতুম মুবারাকাহ শবে কদরও হতে পারে আবার শবে বরাতের রাতও হতে পারে | [ বাহরুল মাদিদ ফি তাফসীরিল কোরানিল মাজিদ ]

আল বাইদাবী রাহিমামুল্লাহ আলাইহি উনি বলেন , লাইলাতুম মুবারাকাহ শবে কদরের রাত তবে শবে বরাতের রাত হতে পারে যখন কুরআন নাজিলের সূচনা হয় অথবা লাওহে মাহফুজ থেকে গোটা কোরান একত্রে দুনিয়ার আসমানে নাজিল করা হয় | [ আনওয়ারুত তানজিল ওয়া আসরারুত তা’উইল ]

তাজুল মুফাস্সেরীন আল্লামা জালালুদ্দিন সুয়ুতি রাহিমামুল্লাহ আলাইহি বলেন , লাইলাতুম মুবারাকাহ শবে কদর আবার শবে বরাত হতে পারে যখন (কোরানকে) সপ্তাকাশের ‘লাওহে মাহফুজ’ (উম্মুল কিতাব) থেকে দুনিয়ার আসমানে নাজিল করা হয় | [ তাফসীরে জালালাইন শরীফ ]

আল ইতফিশ রাহিমামুল্লাহ আলাইহি উনি বলেন , লাইলাতুম মুবারাকাহ শবে কদর অথবা শবে বরাতের রাত | তিনি আরো সংযোজন করেন , আল্লাহর অবতরণের অর্থ হলো উনার খাছ রহমত নাজিল করেন আর কোরআন নাজিলের অর্থ হলো গোটা কুরআনকে বায়তুল মা’মুর থেকে দুনিয়ার আসমানে নাজিল করা, স্থানটি কাবার ঊর্ধ্বাকাশের স্থান | সেখান থেকে জিব্রাইল আলাইহিস সালাম খন্ড আকারে নিয়ে আসেন | এও বলা হয় যে ওহী প্রথমে রবিউল আওয়াল মাসে রাসুল পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিদ্রায় শুরু হয় | তারপর কোরানের প্রথম অংশ নাজিল হয়,’ইক্বরা বিসমি রাব্বিক’ দিয়ে | [ তাইসীরুল কোরআন ]

অতএব পৃথিবী বিখ্যাত মুফাস্সেরীন্দের বেশির ভাগেরই মতামত হলো লাইলাতুম মুবারাকাহ মানে শবে কদর নয় শবে বরাতের রাত | কিন্তু এখনকার কিছু কাট মোল্লা উনারা বলে যে শবে কদরের রাত ! আমার কথা হলো এখনকার পাজি মোল্লা বড় না মুফাস্সের কেরাম উনারা বড় ? এখন আপনারাই বিচার করেন আমরা কি এখনকার পাজি মৌলভির ফতুয়া মানবো নাকি মুফাস্সেরীন্দের কথা মানবো ?

Did you like this? Share it:

About কিতাবুল ইলম

রাসুল সাঃ বলছেন, "প্রচার কর, যদিও তা একটি মাত্র আয়াত হয়" সেই প্রচারের লক্ষে আমরা। 'আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক' প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে আপনি Facebook, Twitter, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]

Leave a Reply