সারা জীবনে ৫০ লক্ষ টাকা দেখেই নি কিন্তু নিজের বিয়ের সময় মোহর দিয়ে দেয় ৫০-৬০ লক্ষ টাকা। তথাকথিত আধুনিকতায় গা বসিয়ে আজ আমাদের সমাজে চলছে মোহর দেয়ার প্রতিযোগিতা। মোহরানা নিয়ে বর ও কনে পক্ষের মধ্যে চলে দর কষাকষি।
মোহরানা হবে স্ত্রীর সম্মান উপযোগী এবং এতো চড়াও নয় যা স্বামীর সাধ্যের বাইরে।
যেসব বিবাহিত পুরুষ আজও নিজেদের জীবনসঙ্গিনীর দেনমোহর আদায় করতে পারেননি কিংবা আদৌ তা পরিশোধের ইচ্ছা নেই, তাদের ব্যাপারে বায়হাকী শরীফের বর্ণনায় রাসূল (সা.) বলেছেন, যে পুরুষ বিয়ে করলো এবং মৃত্যু পর্যন্ত সে স্ত্রীর মোহরানা আদায়ের ইচ্ছাও করেনি, তবে সে অবৈধ ব্যভিচারকারী (ধর্ষণকারী) হিসেবে গণ্য হবে।
বিয়ের সঙ্গে সঙ্গে মোহর আদায় করা উচিত। তবে কারণবশত তখন অপারগ হলে কবে আদায় করবে- তা নির্ধারণ করতে হবে। রাসূল (সা.) এর যুগ এবং সাহাবিদের সময়েও কেউ নারীর মোহরানা বাকি রেখে বিয়ে করতেন না। রাসূল (সা.) নিজ হাতে যেসব বিয়ে দিয়েছেন, হাদীসের কিতাবসমূহে সেসবের বিবরণে দেখা যায়, তিনি নগদ মোহরানার বিনিময়ে বিয়ে করিয়েছেন- হোক তা লোহার আংটি কিংবা যুদ্ধে ব্যবহৃত বর্ম। বাকিতে মোহরানা দেওয়ার প্রচলত তখন ছিল না।
ইমাম আহমদের বর্ণনায় এসেছে, রাসূল (সা.) বলেছেন, মোহর আদায় করার নিয়ত ছাড়া যে ব্যক্তি কোনো নারীকে বিয়ে করে আর আল্লাহ পাক তো ভালো করেই জানেন যে তার মনে মোহরের নিয়ত নেই, তবে এই লোক যেন আল্লাহকে ধোঁকা দেওয়ার স্পর্ধা দেখালো এবং অন্যায়ভাবে তার স্ত্রীকে ভোগ করলো। কিয়ামতের দিন সে ব্যভিচারকারী পুরুষ হিসেবে উপস্থিত হবে।
এক্ষেত্রে আরেকটি বিষয় লক্ষণীয়, পাত্রীদের পক্ষ থেকে যদি পাত্রের সাধ্য অনুযায়ী মোহরানা ধরা হয়, তবে তা সবচেয়ে উত্তম। একথাও সত্য যে, মোহরানার ব্যাপারে ইসলাম সর্বনিম্ন কিংবা সর্বোচ্চ অংক বেঁধে দেয়নি। বরং তা সমাজ এবং সাধ্যের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে রাসূল (সা.) এও বলেছেন, সাধারণ আয়োজনের বিয়েই সর্বোত্তম বরকতময়।
সংকলন- রাকিবুর রহমান খান