নির্বাচিত পোস্টসমূহ
Home » আল- কোরআন » কুরআনের অবিশ্বাস্য গানিতিক বিস্ময়

কুরআনের অবিশ্বাস্য গানিতিক বিস্ময়

আপনি জেনে খুব বিস্মিত হবেন পবিত্র কুরআনের আয়াত গুলোর মধ্যে ১৯ সংখ্যাটির কারুকার্য অত্যন্ত নিখুঁতভাবে গেঁথে দেওয়া হয়েছে । কুরআন যদি কোন রক্ত মাংসের মানুষ দ্বারাই রচিত হত তবে এতে এমন নিখুঁত গানিতিক হিসাব থাকত না । মানুষের চিন্তাশক্তির একটা সীমা আছে, কিন্তু কুরআনের এই নিখুঁত হিসাব সেই সীমাকে অতিক্রম করে অসিমে চলে যায় আর প্রমান করে এক মহাশক্তির অস্তিত্বের সত্যতা । সেই মহাশক্তিই হল মহান আল্লাহ সুবহানওয়াতায়ালা । পুরোটা পড়ার পর আপনার মাথা তাঁর প্রতি শ্রদ্ধায় নত হয়ে আসবে ।

১। আরবীতে “বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম” লিখতে ঠিক ১৯ টা হরফ লাগে ।

২। কুরআনে মোট ১১৪টি সূরা আছে । ১১৪ সংখ্যাটি ১৯ দিয়ে বিভাজ্য (১১৪=১৯x৬)।

৩। প্রথম যে সূরাটি(সূরা আলাক) নাযিল হয় তার অবস্থান শেষের দিক থেকে ১৯ তম ।

৪। প্রথম যে পাঁচটি আয়াত(সূরা আলাকের) নাযিল হয় তাতে ঠিক ১৯ টি শব্দ আছে ।

৫। সূরা আলাকে মোট আয়াত আছে ১৯টি । আর এই ১৯ আয়াতে আছে মোট ২৮৫টি শব্দ যা কিনা বিস্ময়করভাবে ১৯ দিয়ে নিঃশেষে ভাগ করা যায় (২৮৫=১৯x১৫) ।

৬। নাযিলকৃত দ্বিতীয় সূরাটির (সূরা আল-কালাম, কুরআনে অবস্থান ৬৮তম) শব্দসংখ্যা ৩৮(১৯x২)টি।

৭। নাযিলকৃত তৃতীয় সূরাটির (সূরা আল-মুজাম্মিল, কুরআনে অবস্থান ৭৩তম) শব্দসংখ্যা ৫৭(১৯x৩)টি।

৮। আবার সব শেষে নাযিল হওয়া ‘সূরা আন-নাসর’ এ আছে মোট ১৯টি শব্দ । আর এই সূরার প্রথম আয়াতে(আল্লাহ্‌র কাছে সাহায্য চাওয়া হয়েছে এই আয়াতে) আছে ঠিক ১৯টি হরফ ।

৯। কুরআনে ‘আল্লাহ্‌’ নামটি উল্লেখ করা হয়েছে মোট ১৩৩বার যা কিনা ১৯ দিয়ে বিভাজ্য (১৩৩=১৯x৭)।

১০। কুরআনে মোট তিরিশটি পূর্ণসংখ্যার উল্লেখ আছে যাদের যোগফল ১৯ দিয়ে বিভাজ্য ।

1 + 2 + 3 + 4 + 5 + 6 + 7 + 8 + 9 + 10 + 11 + 12 + 19 +20 + 30 + 40 + 50 + 60 + 70 + 80 + 99 + 100 + 200 + 300 + 1000 + 2000 + 3000 + 5000 + 50000 + 100000 = 162,146 (19 x 8534)

১১। আর দশমিক ভগ্নাংশ আছে মোট ৮টি 1/10, 1/8, 1/6, 1/5, 1/4, 1/3, 1/2 এবং 2/3. । তাহলে কুরআনে মোট ৩৮ টি সংখ্যার উল্ল্যেখ আছে (৩৮=১৯x২)।

১২। ১১৩টি সূরার আগে “বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম” আছে । শুধুমাত্র সূরা আত-তাওবা এর আগে “বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম” নেই । আর সূরা আন-নামল এর আগে আছে “বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম” দুইবার করে আছে । তাহলে কুরআনে “বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম” আছে মোট ১১৪(১৯ x৬)বার । সূরা আত-তাওবা কে প্রথম ধরে যদি গুনে গুনে পরবর্তী সূরার দিকে যেতে থাকেন তবে সূরা আন-নামল পাবেন ঠিক ১৯তম স্থানে ! (ছবিতে দেখুন)

আরও একটু অবাক হওয়া যাক, ১৯ এর গুনিতক-তম সূরার আয়াতগুলির (“বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম” সহ) যোগফলও ১৯ এর গুনিতক মানে ১৯ দিয়ে বিভাজ্য !

কুরাআনে সূরার অবস্থান         আয়াত সংখ্যা

১৯x১=  ১৯তম সূরা                        ৯৯

১৯x২=  ৩৮তম সূরা                       ৮৯

১৯x৩= ৫৭তম সূরা                        ৩০

১৯x৪= ৭৬তম সূরা                        ৩২

১৯x৫= ৯৫তম সূরা                          ৯

১৯x৬= ১১৪তম সূরা                        ৭

                                             =২৬৬(১৯x৪)

১৩ । প্রথম দিক থেকে হিসেব করে যেতে থাকলে ১৯ আয়াত সম্বলিত প্রথম সূরা হচ্ছে সূরা আল-ইনফিতার । এই সুরাটির শেষ শব্দ হল ‘আল্লাহ্‌’ । আপনি যদি শেষের দিক হতে আল্লাহ্‌ শব্দটি গুনেগুনে আসতে থাকেন আপনি তাহলে সূরা আল-ইনফিতারের শেষের ‘আল্লাহ্‌’ এর অবস্থান হবে একদম ঠিক ১৯তম স্থানে ! আল্লাহ্‌ আকবর ।

১৪ । ৫০ এবং ৪২তম সূরার প্রত্যেকেই শুরু হয়েছে কাফ দিয়ে । অবাক হবেন সূরা দুটির প্রত্যেকটিতে মোট কাফের সংখ্যা(৫৭=১৯ x) সমান । আবার ৫০তম সূরায় আয়াত আছে ৪৫টি, যোগ করুন৫০+৪৫= ৯৫(১৯ x৫) । একইভাবে ৪২তম সূরায় আয়াত আছে ৫৩টি, ৪২+৫৩= ৯৫(১৯ x৫) ।

৫০তম সূরা                                  ৫৭(১৯ x৩) বার কাফ

৪২তম সূরা                                  ৫৭(১৯ x৩) বার কাফ

৫০তম সূরা       ৪৫টি আয়াত           ৫০+৪৫= ৯৫(১৯ x৫)

৪২তম সূরা       ৫৩টি আয়াত           ৪২+৫৩= ৯৫(১৯ x৫)

আবার পুরো কুরআনে কাফ হরফটি আছে মোট ৭৯৮ বার যা কিনা ১৯ দিয়ে বিভাজ্য এবং ভাগফল হয় ৪২ । আর দেখতেই পেয়েছি যে ৪২ তম সুরাটি শুরুও হয়েছে কাফ দিয়ে ।

শুধু কাফ না ‘নুন’ হরফটির ক্ষেত্রেও এরকম বেপার আছে ।  যেমন নুন দিয়ে যে সূরাটি শুরু হয়েছে তাতে নুনের মোট সংখ্যাও(১৩৩) ১৯ দিয়ে বিভাজ্য (১৩৩= ১৯x৭) ।

312204_220452461354620_163227887077078_557880_1905535951_n

সূরা আত-তাওবা কে প্রথম ধরে যদি গুনে গুনে পরবর্তী সূরার দিকে যেতে থাকেন তবে সূরা আন-নামল পাবেন ঠিক ১৯তম স্থানে !

কুরআনে সূরা আল-মুদ্দাসিরের ৩০ নম্বর আয়াতে চ্যালেঞ্জ করে বলা আছে   “There are nineteen in charge of it.” (Qur’an, 74:30) । অর্থাৎ ১৯ সংখ্যাটি এর দায়িত্তে আছে । অর্থাৎ কেউ ইচ্ছা করলেই কুরআনকে বিকৃত করতে পারবে না । ১৯ এর বেপার গুলো হিসেব করলেই সব বের হয়ে আসবে এটাকে কেউ বিকৃত করেছে কিনা !একটু চিন্তা করুন কেউ একটা বই লিখে সেই বইয়ের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে এমন একটা চ্যালেঞ্জ করতে পারবে? আপনি অনেক প্রতিভাবান লেখক আপনি পারবেন শব্দ,বর্ণ,বাক্যের সংখ্যা নিয়ে এরকম একটা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে একটা বই লিখতে ? এসবই প্রমাণ করে কুরআন কোন মানুষের তৈরি কাকতালীয়ভাবে মিলে যাওয়া কোন বই না । এটা সৃষ্টিকর্তার নিজের কথা,বানী । একারণেই আদ্যবধি যেমন কুরআন বিকৃত হয়নি তেমনি কেয়ামতের আগ পর্যন্তও হবে না । মহাশক্তিধর আল্লাহ্‌ নিজেই যে এর রক্ষক ।

লিখেছেন  “চতুর্থ মাত্রা”

Did you like this? Share it:

About কিতাবুল ইলম

রাসুল সাঃ বলছেন, "প্রচার কর, যদিও তা একটি মাত্র আয়াত হয়" সেই প্রচারের লক্ষে আমরা। 'আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক' প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে আপনি Facebook, Twitter, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]

Leave a Reply